রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১২ পূর্বাহ্ন
বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, কালের খবর : পরিবেশবান্ধব জৈব্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রচলিত ও অপ্রচলিত নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও সম্প্রসারণসহ এলাকার খেটে খাওয়া মানুষদের কর্মসংস্থানে অবদান রাখায় ব্যক্তি পর্যায়ে দেশের শ্রেষ্ঠ কৃষক মনোনীত হয়েছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মো. হামিদুল ইসলাম।
গত ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনে জাতীয় সবজি মেলা ২০১৯ এর আয়োজন করে। এতে দেশের শ্রেষ্ঠ সবজি চাষির প্রথম পুরস্কার লাভ করেন মো. হামিদুল ইসলাম।
পুরস্কার হিসেবে তিনি একটি ক্রেস্ট ও নগদ ১০ হাজার টাকা লাভ করেন। বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিক্সসন চন্দ্রপাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হামিদুল ইসলাম উপজেলার পৌরসভার মামুদপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে।
কৃষক হামিদুল ইসলাম জানান, নিজের জমি মাত্র ষাট শতক আর অন্যের ২০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চার ধরনের সবজি উৎপাদন করেন তিনি। উৎপাদিত সবজির মধ্যে গ্রিনবার্ড হাইব্রিড শশা, করলা, মিষ্টি কদু, শিম উৎপাদন করা হয়। কিছু জমিতে তিনি আলাদাভাবে দেশি মরিচ, হাউব্রিড মরিচ, ফুলকপি ,বাঁধাকপি, পিঁয়াজ, বেগুন, ডোপা সাহেব বেগুন, রসুন আবাদ করেন।
তিনি জানান, নিজের চেষ্টায় দেশ স্বাধীনের পর থেকে ২০ হাজার টাকায় প্রথম সবজি চাষ শুরু করা হয়। পরে প্রতি বছর একটু একটু করে এখন নিজেরসহ অন্যের বর্গা নেয়া ২০ বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেন তিনি। এতে উপজেলা কৃষি অফিস তাকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন।
তিনি জানান, এই কাজে তার তিন ছেলেও সহযোগিতা করেন। তাছাড়া তার আবাদকৃত জমিতে এলাকার প্রায় ৩০ জন লোক প্রতিদিন কাজ করছেন।
হামিদুল জানান, এ বছর ৩ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকার শশা, ২ লাখ ৫ হাজার টাকার করলা, ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার মরিচ, ৪০ হাজার টাকার মিষ্টি কদুসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করা হয়েছে। এতে তার উৎপাদিত ফসলে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকা আয় হয়েছে।
তার উৎপাদিক ফসল দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয় বলেও তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার উপজেলায় ১১শ পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। এই সবজিগুলোর মধ্যে আগাম সবজি ছিল অনেক বেশি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, শিম, টমেটো ছিল অন্যতম। গত ৫ বছরে উপজেলায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে সবজিচাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা নিক্সসন চন্দ্রপাল জানান, জাতীয় পর্যায়ে বিরামপুর উপজেলা থেকে একজন কৃষকের নাম কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছিল। জেলা থেকে বিভিন্নভাবে যাচায়-বাছায় শেষে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে পাঠানোর পর কর্তৃপক্ষ তাকে দেশসেরা নির্বাচন করেন। তার এ অবদানের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি জানান, হামিদুল ইসলাম একই জমিতে চার ধরনের সবজি উৎপাদন করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তার উৎপাদিত সবজিগুলো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অনেক জেলাতেই চলে যায়। এক জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদনের বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস তাকে তথ্য ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছেন।